Saturday 29 December 2012

তোর আমি কি?


এক্ষুনি তুই অন্য কেউ!
রংধোঁয়াশা সর্বনাশা
যেদিন তোকে দেখেছিলাম মিথ্যে সে-ও...
অন্য কেউ!
অন্য কেউ!

পরক্ষণেই আকাশ তুই...
রংমশালে দহনকালে
ফুল্‌কি হয়ে পুড়লে তোকে একটু ছুঁই...
আকাশ তুই,
আকাশ তুই।

একদিনকে তুই হিসেব;
"বলবো নাকি চুপটি থাকি"
দস্তাবেজে অঙ্কমেশা অধঃক্ষেপ!
তুই হিসেব,
তুই হিসেব।

সেই বিকেলেই বেহাগ-মন...
ঘুম-মহুলে ইচ্ছেভুলে
"স্বস্তি দেবো, স্বস্তি দেবো"... পাগলপন!
বেহাগ-মন,
বেহাগ-মন!

তোর আমি কি? রঙীন কাঁচ?
বদলচোখে দেখলে তোকে
সাতরঙা তুই এককাপড়ে... একটি সাজ...
রঙীন কাঁচ!
রঙীন কাঁচ!

Saturday 1 December 2012

আলাপিতায়... এস.এম.এস. এ... ...


[কোন এক রাতে গুমোট থেকে মেঘলা পেরিয়ে দারুণ বৃষ্টি হয়েছিল শেষকালে, ভোরের দিকে... আমরা জেগেছিলাম... আর একটানা লেখা হয়েছিল কিছু পাগলামির এস.এম.এস... তাই দিলাম, একটুও বদল না করে...]

তুইঃ
সারাটারাত কার নামে যে গা ধোয়ালো?
বৃষ্টিভেজা আকাশ দিলো ডাইরি পাতায়...
আমার কেমন বাঁধ মানে না ইচ্ছেগুলো...
স্বপ্ন বেছে আটকে রাখি নকশিকাঁথায়...

আমিঃ
এমনি করে কার পায়ে তুই ঝড় লুটিয়ে
মল পরালি? ঘুম ছুটিয়ে
কার সে হাতের রাখলি পরশ বুকপকেটে?
প্রাচীন যত ছন্দ কেটে আঁকলি খাতায় পাতাবাহার...?
নামখানি তার বল্‌ না আমায়... নামখানি তার...

তুইঃ
ইচ্ছেপরাগ ঘুম ভুলে যায় তার পরশে,
নাম কি দেবো...! বকুলকথা...? নয়ানজুলি...?
সাবধানী’রা মানচিত্রের হিসেব কশে,
আর আমি এক... ভাঁটার টানে উজান ভুলি...

আমিঃ
তোদের কত গল্প থাকে সাগরপারের...!

উজান বাতাস আমার হাতের ইচ্ছেপালক...
আমার ফোনের মনখারাপি স্ক্রিনসেভারে
সেই তো ভাসায় ঘোর সেপিয়ায় সুতীব্র চোখ...

তুইঃ
রাত ফুরিয়ে ঠিক যবে সেই চৈতালি ভোর
দ্যাখ খুলে দ্যাখ মুঠোর ভেতর তোর’ও আকাশ,
সাগর রঙের স্বপ্ন আছে তোর আঁচলেও
ইচ্ছে করেই ভুল করে দ্যাখ... এই অবকাশ...!

আমিঃ
ধুর ! তুমি ছাই কিচ্ছু বুঝলে না কো...
‘ভুলপুরানে’র ছবিই খালি আঁকো...!
রোদ পড়েছে আমার ঠোঁটের কোণে...
বৃষ্টি-আকাশ আমার তমাল বনের...

তুইঃ
ঠিক বলেছিস... বুঝতে আমি চাই না কিছু
নিঝুম দুপুর... ছাদ-রেলিঙে আকাশ নিচু...
তুমিই বল, কি লাভ মেলে একলা বেঁচে?
কাকতাড়ুয়া একা-একাই বৃষ্টি ভেজে...
বড্ড ক্লিশে একটা চাঁদের ওলোটপালোট,
কালোয় মিশে বড্ড কাঁদায় আপোশবাণী
মন’টা বোকা... রাতের কাছে খেয়েছে চোট...
বাসি খাটে মুখ গুঁজে হয় কানাকানিই...

আমিঃ
সমুদ্রনীল বাতাস আসে আমার পাড়ায় সে সব রাতে...
যখন তুমি আপোশ শোনো... প্লাবন শুনি বৃষ্টিপাতে!
যাবি তো চল্‌... চোট ভুলে একছুট্টে ঝড়ের অন্তরীপে,
আলো জ্বলুক... আলো নিভুক... আমার হাতের জোনাক-দীপে...

তুইঃ
চল না খেলি দু'জন তবে নতুন খেলা?
আলোর ঘরের নিশান খোঁজা সমুদ্দুরে?
পুকুরজলে পা ডোবানোর স্বপ্নভেলা
ভাসিয়ে দিই চল্‌ গাঙ-মোহনার উথাল জুড়ে...

আমিঃ
আমার কথাও রাখলে তবে খেলতে পারি
বাঁচার খেলায় ভাগাভাগি মানলে, তবে...
অন্ধকারে সমান হবে অংশিদারী
আগুনব্যথার আদ্ধেকটাও আমার হবে...
আয়না ভাঙা কাচের গুঁড়ো... তাও দুজনের...
নিয়মগুলো তোর আর আমার আধাআধি...
স্বপ্ন পেলেও ভাগ হবে তা চারটি চোখে
রাজি তো চল্‌, নতুন খেলার মন্ত্র ফাঁদি...

Saturday 17 November 2012

সোহাগী


শ্যাম, আমি তোর রাই হবো না... নীলাম্বরী...
তুই বিহনে জাগবো না রাত অশ্রুসজল,
তুই আমাকে বাঁশিই করিস সোহাগরঙের
আর বাধাহীন আশ্রয় দিস... ঠোঁটের আগল...!

খেলাচ্ছলেই অহল্যা এই আমায় জাগাস
রাখালিয়ায় স্নান করিয়ে সারা গোকুল
বইবো আমি... খুব অনায়াস... আর অবিরল
আর গোপিনীর হাত ভরাবে কলঙ্কফুল...

যন্ত্রণাতে নীল বিষে তুই আমায় ভরাস,
আর মাধবী জড়িয়ে রাখিস অপেক্ষাতে...
শ্বেতকরবীর স্বপ্ন ভাসাস মাঝযমুনায়
আর আমাকে আগলে রাখিস অন্য হাতে...

শ্যাম, আমি তোর মধ্যরাতের সঙ্গিনী হই...?
আমায় জুড়ে মন্ত্র ঢালিস... মন্ত্রণাহীন...
একলা আমি তোর আঙুলের নিই না দখল...?
উছলে পড়ুক প্লাবন... তবু তৃষ্ণা গহীন...!

এমনি চলুক... ভুলবি না তো বেখেয়ালে?
খুব অভিমান করবো তবে তোর ওপরে,
বুঝতে পেরেও কি সুর খেলে মনের ভাঁজে
অন্য সুরে বাজবো আমি... ইচ্ছে করে...

আর যদি ধর, এমনি আমি হারিয়ে গেলাম...
তন্ন করে খুঁজবি আমায়...? আমি যেমন
সমস্তখন খুঁজছি তোকে...? ঠিক সেভাবে
ধূসর হবে, অলীক হবে রাত্রিযাপন...

আরো খারাপ? হারিয়ে গেলাম... আর পেলি না...!
মনখারাপে ডুববি তখন... সর্বনাশী
এক'শ সুরের ঋণ কোলে তুই থাকবি জেগে...
আমিই তখন তোর বিরহ...!! শ্যামের 'বাঁশি'...!

শ্যাম, আমি যে আর জানিনা বাঁচার উপায়,
রাই হবো না, চাই হতে তোর প্রাণজোনাকি...
গভীর শীতে আরো গভীর উষ্ণতা হই...?
শ্যাম, আমি যে ভীষণ রকম 'তুই-সোহাগী'...!

Wednesday 10 October 2012

অনেক দূরের পথ


অনেক দূরের পথ বাকি; প্রয়োজন হলে
আমায় হাজার নামে ডাকতেই পারো...
কিম্বা না-ডেকে থাকা... তাও হয়...

শুধু পিপাসা গহীন হলে শ্বাস নিও গাঢ়
আমি আছি... দেখো,
নিশ্চুপে; বুকজুড়ে আর্দ্রতা দেবো বলে...
আমি আছি খুব কাছ ঘেঁষে...
আমি আছি তৃষ্ণার জলে।

আলেয়া ডাকলে পরে... পথ ভুলে দলছুট হলে
তোমার চোখেতে লীন ধ্রুবতারা হয়ে যেতে পারি...
ভরসার সামিয়ানা শ্রাবনী মেঘের...
ভালোবাসা ভরসা আসলে;
ভালোবাসা মন-ভালো-বাড়ি...!

শুধু যদি কোনোদিন ঝড় ওঠে...
খুব ঝড়...
যদি বাজ পড়ে...
বানভাসি হয়ে যাবো, যদি ভয় করে...
সেদিন দোচালা হোয়ো... অচল, অনড় আশ্রয়
ঘুম এঁকে দিও চোখে খুব ভালোবেসে
দূর করে বুক-কাঁপা সব সংশয়!

বেশি চাওয়া নয়...
শুধু এটুকুই
হাতে ধরা থাক খালি তোমার আঙুল...

অনামী ঘাসের প্রিয়া হবো...
বেগনি রঙের ঘাসফুল...

Wednesday 19 September 2012

রংরঙিন


কিই বা হবে কালশিটে দাগ নিবিড় হলে,
কিই বা হবে ঘুম না এলে মর্চেধরা,
কিই বা হবে লাটাই যদি সামলানো দায়,
ইচ্ছেলেখার আধপাতা হোক গিলটি করা...!

ইচ্ছে আমার তোর সকালের আকাশ জুড়ে
টারকুইজের রঙ গুলে দিই; স্বপ্নসকাশ,
ইচ্ছে যে তোর দিনের চলা শুরুর পথে
ঠোঁট ছোঁয়াবে ভিরিডিয়ান অনাম্নী ঘাস !

ইচ্ছে আমার তোর বাগানে ফুলের মেলা
ল্যাভেন্ডারের গোলাপি আর সর্ষে হলুদ,
ইচ্ছে আমার তোর দু-মুঠো আলোয় আলো
কাঁচা সোনার রোদ্দুরে হোক আপনাতে বুঁদ...

ইচ্ছে আমার তোর সারাদিন আঁকবো আমি
আনুপাতিক অলিভ পরত মাখিয়ে তাতে
ইচ্ছে যে ঠিক সময়মতন ঘুম ভাসাবো
প্রুসিয়ানের সঙ্গে সবুজ মধ্যরাতের...

ইচ্ছে যে তোর স্যাফায়ারের রাত-আসমান
চাঁদোয়া হোক ম্যাগনোলিয়া নক্সা কাটা...
ইচ্ছে যে তুই স্বপ্নবাজার দখল করিস
শেষ করে ওই সেপিয়া রঙ রাস্তা হাঁটা...

ইচ্ছে যে তোর শান্তি ডুবুক আইভরিতে
লাইলাক আর ভায়োলেটের তুলির ছোঁয়ায়
আশা'রা সব জিইয়ে থাকুক হাসির মতন
কমলারঙা আলোর কুচি কুড়িয়ে নিই... আয়!

ইচ্ছে যে তোর ইচ্ছেগুলো আকাশি হোক,
স্বপ্নগুলোয় কচি নেবুর সবুজ হদিস,
পারস্য লাল সোহাগ থাকুক হৃদয় ভরে,
ভরসাতে তোর চেরিফুলের রঙ ভরে নিস...

কিই বা হবে কালশিটে দাগ, মর্চে ঘুমে
ফোঁটার সাথে প্যালেট দিলাম আয়না দেখার
যমের দুয়োর ক্যাকটাসে আর কাঁটায় কয়েদ...
সোনার ফ্রেমে বাঁধিয়ে দিলাম ইচ্ছেলেখা...

Sunday 26 August 2012

আমার প্রিয় ইলশেগুঁড়ি


আমার প্রিয় ইলশেগুঁড়ি, কেমন আছিস, বল্?
আর কাকিমা কেমন আছেন? কেয়া দি? চঞ্চল?
আর বাকি সব খবর কি রে? কেমন শ্বশুরবাড়ি?
বিয়ের দিনে যাই নি বলে রাগ করেছিস ভারি...
তাই না...? আমি যাই নি তা নয়... যাই নি বলা ভুল...
দু'দিন আগে চিঠি পেলাম... আমার তো ইস্কুল!
একলা আমি... চারটে ক্লাসের একলা দিদিমনি...
কলকাতাতে যাওয়া-আসা... সময় অনেকক্ষণই
লাগতো, জানিস... তার ওপরে মায়ের শরীর যা না!
আর কত কি বলবো তোকে? সবই তো তোর জানা...
তাই ভাবলাম, বৃষ্টি লিখি... রোদ লিখে দিই তোকে...
ছায়ায় ঢাকা পথ লিখে দিই... স্বপ্ন লিখি চোখে...!

মনে পড়ছে, জানিস... তোদের দেউল ছাড়ার আগে
সেই যে আমরা হেঁটেছিলাম... ভাবতে অবাক লাগে...
কালিপাহাড়ি পেরিয়ে গেলে রেললাইন'টা পড়ে...
মনে পড়ে, ইলশেগুঁড়ি, লাইন ধরে ধরে
কত'টা পথ হেঁটেছিলাম... পিছন ফেলে গাঁ-টা,
ব্রিজ পেরিয়ে... ক্ষেত পেরিয়ে... অনন্তকাল হাঁটা...
'দেউল হল্ট' ছাড়িয়ে গিয়ে বাঁ'দিকে সেই পোড়ো
ভূতের বাড়ি...? কত কথা... আমারও আর তোরও
ছিল সেদিন... ভেবেছিলাম, তুই-ই চলে গেলে,
আমার কথা ঐ বাড়িতেই লুকিয়ে যাবো ফেলে...

কত কথাই থাকতো তখন...! কাদের নিয়ে কথা??
কোথায় তারা, ইলশেগুঁড়ি...? ভীষণ অসুস্থতা
সমস্তদিক ঢাকছে, জানিস? মা'কে নিয়ে ভাবি...
বাইশখানা ওষুধ দিনের... আমার ঘরের চাবি
ওই আঁচলেই... আমিও তো ভাই ওই আঁচলেই বাঁধা...
লড়ছি, জানিস...! তবুও কেমন মিলছে না এই ধাঁধা...!
বড়দি তো সেই ঘরেই বসে; বৌ'ভাত আর বিয়ে
সবই বেকার... মেয়ে বলে কেউ যায় নি ওকে নিয়ে;
কি যে ওরা চেয়েছিল? গয়না, শরীর, ভিটে...?
দু'দিন বাদে ফিরলো; সাথে অগুনতি কালশিটে...
বড়দি আমার সাথেই আছে... চুলোয় নিয়ম-রীতি!
সে সব কথা হয় নি বলা... হয় নি লেখা চিঠি...
আসল কথা, লিখবো'টা কি? পাইনি খুঁজে কূল;
সেই থেকে এই তিনটি প্রানী... ভরসা আমার স্কুল...
তুই বলবি, "কেন? অমল...?"... আমার হাসির পালা...
"আমায় ভালোবাসে অমল? ও হবে আটচালা...?"
বলেছিলাম... মনে আছে? পোড়ো বাড়ির ছাদে?
আমার হাসি আটকে গেছে আমার কথার ফাঁদে;

ঘাটতি, জানিস, দারুন ঘাটতি পড়েছে সংযমে,
সারা'টা ক্ষন কেমন জানি ভয় করে ছমছমে...
রাতের বেলা একলা শুলে পূবমুখো এই ঘরে
রেলের লাইন ধরে হাঁটা ভীষণ মনে পড়ে...
সেদিন আকাশ রাঙিয়ে ছিল শিমূল ফুলে ফুলে...
গানও একটা বেঁধেছিলাম... সুর'টা গেছি ভুলে...
কথাগুলো...? কথাগুলো দারুন অভিমানে
মুখোস পরে হারিয়ে গেছে কুঠরি-অভিধানে...
তুই বলতিস, ছন্দ আছে আমার ভিতর নাকি!
ছন্নছাড়া খুঁজছি আমি ছন্দ মানে'টা কি?!
সাহসগুলো মরছে, জানিস... কপাল ফুটিফাটা...
কত'টা পথ? ইলশেগুঁড়ি... আর কত'টা হাঁটা...?

বাদ দে...! তুই ভালো থাকিস... ভালো রাখিস আরও...
তুমি আমার ইলশেগুঁড়ি, সবই তুমি পারো...
"তোর বিয়েতে........." এম্নি কত ফর্দ ছিল টোকা...
কোথায় সেসব? সময় কেমন বানিয়ে গেল বোকা...!
“নদীই দেবো” ভাবতে দেখি শুকিয়ে নদী সোঁতা...
বৃষ্টি দেবো... ছায়াও দেবো... সবই কথার কথা...
সত্যি করে তোর বিয়েতে কিচ্ছুটি নেই দেবার...
পারলে, তুই পদ্য ছেড়ে গল্প লিখিস এবার।

Tuesday 17 July 2012

একটা রাখবে কথা...


আজকে শুকনো হাওয়া খুব করে টেনে নিল জল
আমার চোখের থেকে...ঠোঁট থেকে;
বেপরোয়া হয়ে গিয়ে আর্দ্রতা পেতে
আমাকেই ধরে নিল শেষ সম্বল!


আমার নিরালা গলি, শ্যাওলা-সকাল
বৃষ্টি চায় নি আর;
সকালের রোদ তবু টুপ
করে ডুবে গেছে; নিষ্ফলা কাজ আর বিদ্রূপ
ধূসরে ছুপিয়ে গেছে নীল-শাড়ি-পাড়।


আগুনে-বিকেল শেষে হাত ছোঁয় চেনা সন্ধ্যার
সেঁজুতিয়া রঙ ধরে... উন্মুখ তুলসীতলার
বুকে আলো...
আমি সব নিভিয়ে দিয়েছি।
সন্ধ্যে সাতটা মানে তাই মোমবাতি
কাগজেতে হিজিবিজি, শেষ বাস, ভ্রমে মাতামাতি।


তোমার কান্না আসে?
এভাবে আমায় দেখে...
মনে হয় ভুল হয়ে গেছে?
তোমারও হাতের পাতা ঠাঁই-খোঁজা কান্নায় ভাসে?


মনে আছে...? সাঁঝবাতি, শঙ্খের ধ্বনি...
কি ভীষণ ভালোবাসা জড়াতো এসবে?
উচ্ছ্বাসে ভরা কত রাশি রাশি দাবী,
গৌরবে মাখা দিন, কত উত্সবে
তোমাকে ছুঁয়েছি আমি...
ভোলো নি তো? বলো...?


বদলে গেছে, দ্যাখো না, এ সালতামামী;
এখন শিউরে উঠি প্রত্যেক রাতে...
ভোররাত পার করে যোজনখানেক হেঁটে আশ্বাস খুঁজি;
সব নিয়ে চলে গেছো...! সবটুকু ভরসার পুঁজি...!
এভাবে কি যেতে হয়? খেয়া ফেলে মাঝদরিয়াতে...?


একটা রাখবে কথা?
চিঠি দেবে...?
মেঘেদের খামে,
ছাদের রেলিং ধারে,
একখানি বন্ধ বয়ামে
ইচ্ছে পাঠাবে ক'টা...? ডানাওলা স্বপ্নও...? বৃষ্টির মত
সারারাত, সারারাত ধরে অবিরত
আমাকে ভেজাবে ওরা...
থোকা থোকা সাদা ফুল হয়ে...


আমার শুকনো চোখ ঠাঁই খুঁজে নেবে ঠিক সেই আশ্রয়ে...



Wednesday 13 June 2012

এলোমেলো


বহুদিন রঙ তুলি ভুলে গেছি।
বদলে এনেছি
জবাব-সওয়াল কিছু... কিছু চোরাবালি...
দু'হাতের তালু জুড়ে কালি... শুধু কালি...।

তবু অগোচরে সেই মরে যাওয়া জলরং কাগজ রাঙায়...

মেঘ-ছেঁড়া-রোদ্দুর তন্দ্রা ভাঙায়
শর্মিলি ঘাস হেসে দিগন্ত পার করে বিছায় আঁচল
পাহাড়ের গায়ে গায়ে গলে পড়ে সিন্দুরি মেঘেদের দল
দেবদারু সারি
কানে কানে বলে দেয় আকাশ আমারই...
আর দূরে... বেশ নিচে... রূপোলি ফিতের মত চলে যায় বেঁকে
ঝিরঝিরে নদী এক মিষ্টি নামের; তোর হাসি দেখে
হেরে যায় নিমেষেই ঝরে পড়া চিনারের পাতা অবিরত...
কোলাজের মত এসে ভিড় করে ধোয়া ছবি যত...

এইটুকু আঁকা হলে আমি বলি... আর নয়! চল...
ওঠ দেখি! এলোমেলো ছবি সব... তাই নয়? বল...?

তবু কোথা থেকে
টুকরো হাসির কথা কারা যায় রেখে!
আঁধারি মনের মাঝে প্রশ্ন ধাঁধায়...

"ওইখানে একখানি ঘর বাঁধা যায়??"